স্মার্ট মনির
SMART MONIR
INSTITUTE CODE: EIIN:
কোড়কদী(KARAKDI), মধুখালী(MADHUKHALI), ফরিদপুর(FARIDPUR)Email: islammonirul858@gmail.com | Mobile: 01912550095
Web: https://www.smartmonir.com/
  ব্রেকিং নিউজ  

MONIRUL ISLAM
CEO, SMARTMONIR.COM,

ছাত্রী কর্তৃক প্রাপ্ত ছবি
, ছাত্রীর নাম: রুকাইয়া, শ্রেণি-৮ম
_jpg_jpg.jpg)
ড. মুহাম্মদ ইউনূস
, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা

অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার
মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়

মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্যা
, জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল নং : ০১৭৪১১১৮৮৮৬ ফোন (অফিস) : ০২৪৭৮৮০৩০২২ ই-মেইল : dcfaridpur@mopa.gov.bd ফ্যাক্স : ০৬৩১৬৩০৮৬ ব্যাচ (বিসিএস) : ২৫ বর্তমান কর্মস্থলে যোগদানের তারিখ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মোঃ আবু রাসেল
উপজেলা নির্বাহী অফিসার,মধুখালী,ফরিদপুর, মোবাইল নং : ০১৭০১-৬৭০০২৭ ফোন (অফিস) : ০৬৩২৬-৫৬২৫৫ ই-মেইল : unomadhukhali@mopa.gov.bd ফ্যাক্স : ০৬৩২৬-৫৬২৪০ ব্যাচ (বিসিএস) : ৩৫ বর্তমান কর্মস্থলে যোগদানের তারিখ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪

বিষ্ণু পদ ঘোষাল
, জেলা শিক্ষা অফিসার ফরিদপুর। ফোন: ০৬৩১৬২৬৭৭ মোবাইল: 01712619704 Email: faridpurdeo2008@yahoo.com

মোঃ আঃ আউয়াল আকন
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার,মধুখালী,ফরিদপুর, মোবাইল নং : ০১৭১৬১১৪৮৩৬ ফোন (অফিস) : +৮৮০৬৩২৬-৫৬০৬২ ই-মেইল : useomadhukhali@gmail.com বর্তমান কর্মস্থলে যোগদানের তারিখ : ০৪ অক্টোবর ২০২২

রাশেদুল ইসলাম
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার,মধুখালী,ফরিদপুর, মোবাইল নং : ০১৭১০৭০৪৬৯৮ ই-মেইল : uasmadhukhali@gmail.com

জনাব মনিরুল ইসলাম
সহকারী শিক্ষক (নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, ঢাকা বিভাগ ও A2i জেলা অ্যাম্বেসেডর শিক্ষক), বিজ্ঞান বিভাগ, কাজী সিরাজুল ইসলাম গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ
SL | CLASS | TOTAL | Present BOYS | Present GIRLS | COMMENTS |
---|
বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন বছর আগে বিগ ব্যাংয়ের ফলে আবির্ভূত হয় শক্তি, পদার্থ সময় ও স্থান। প্রায় ৩৮০ কোটি বছর আগে পৃথিবী নামক একটি গ্রহে নির্দিষ্ট অণু মিলে জীবন নামের বেশ বড়সড় ও যৌগিক কাঠামো তৈরি হতে শুরু করে। আজ থেকে প্রায় ৭০ হাজার বছর আগে বুদ্ধিবৃত্তিক বিপ্লব ইতিহাসের চাকা ঘোরাতে শুরু করে। প্রায় ১২-১৩ হাজার বছর আগে শুরু হওয়া কৃষিবিপ্লব এই গতিকে ত্বরান্বিত করে। আর মাত্র ৫০০ বছর আগে শুরু হওয়া বৈজ্ঞানিক বিপ্লব হয়তো চলমান ইতিহাসের সমাপ্তি ঘটিয়ে আগামীতে আবির্ভাব ঘটাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছুর।
প্রাণিজগৎ বা জীবজগতের মধ্যে মানুষের শীর্ষস্থান দখলের পেছনে অন্যতম প্রধান ভূমিকা রেখে আগুনের আবিষ্কার ও আগুনকে বশে রাখার দক্ষতা। আগুনের ব্যবহার মানুষকে আর অন্য প্রাণীদের মধ্যে বিশাল ব্যবধানের সৃষ্টি করেছে। কেননা অন্য প্রায় সব প্রাণীরই শক্তি নির্ভর করে, তার শক্তি-সামর্থ্যরে ওপর। তাই আগুনের আবিষ্কার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই মানুষের উদ্ভাবনী সক্ষমতার প্রথম প্রকাশ।
মানবজাতির আদিকাল থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ভিত্তি করেই সভ্যতার ক্রমবিকাশ বা উত্তরণ ঘটেছে। তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নব নব আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের অগ্রগতি অগ্রগমনের ইতিহাসই সভ্যতা বিকাশের ইতিহাস। মানুষের মেধা-মননের উদ্ভাবনী জ্ঞান প্রয়োগের মধ্য দিয়ে জীবন, জীবিকা ও অগ্রগমনে প্রযুক্তি ধাপে ধাপে উন্নত থেকে উন্নতর হয়েছে; আর এই উদ্ভাবনকে কেন্দ্র করেই বিকশিত হয়েছে মানবসভ্যতা। সংগতই প্রশ্ন এসে যায়, উদ্ভাবন কী? উদ্ভাবন সম্পর্কে বিশ্বের খ্যাতিমান বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিশ্লেষক বিভিন্ন আঙ্গিকে ধারণা দিয়েছেন। যেমন অর্থনীতিবিদ জোসেফ শুম্পেটারের মতে, উদ্ভাবন হলো সৃজনশীল ধ্বংস, যা ক্রমাগত অর্থনৈতিক কাঠামোর ভেতর থেকে বিপ্লব ঘটায় এবং ক্রমাগত পুরোনোটিকে ধ্বংস করে অবিরামভাবে নতুন কিছু তৈরি করে। ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট পিটার ড্রাকারের মতে, উদ্ভাবন হলো উদ্যোক্তার সুনির্দিষ্ট যন্ত্র, যা সম্পদ সৃষ্টির জন্য একটি নতুন ক্ষমতা দিয়ে সম্পদ সৃষ্টি করে। অধ্যাপক ক্লেটন ক্রিস্টেনসেনের মতে, উদ্ভাবন শুধু নতুন প্রযুক্তির বিষয় নয়, এটি এমন একটি প্রক্রিয়া, যা বাজারে গ্রাহকদের দ্বারা গৃহীত পণ্য বা পরিষেবা তৈরি করতে বিভিন্ন উদ্ভাবনকে একত্র করে। পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের মতে, বুদ্ধিমত্তার প্রকৃত চিহ্ন জ্ঞান নয়, কল্পনা। উদ্ভাবন হলো সমস্যার সমাধান এবং নতুন সম্ভাবনা তৈরি করার জন্য কল্পনা প্রয়োগের ফল। অর্থনীতিবিদ কার্লোটা পেরেজের মতে, উদ্ভাবন শুধু প্রযুক্তির বিষয় নয়, এটি একটি সামাজিক প্রক্রিয়া, যার মধ্যে প্রতিষ্ঠান, অবকাঠামো ও সমাজ যেভাবে তার সমস্যাগুলো সমাধান করতে এবং একটি ভালো ভবিষ্যৎ তৈরি করতে নিজেকে সংগঠিত করে। এই সংজ্ঞাগুলো বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের গতিশীল এবং পরিবর্তনশীল প্রকৃতির ওপর জোর দেয়।
বর্ণিত ধারণা থেকে এটি স্পষ্ট, উদ্ভাবন হচ্ছে নতুন কিছু প্রবর্তন বা বিদ্যমান ধারণা, পণ্য বা প্রক্রিয়াকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করার প্রক্রিয়া। উদ্ভাবন (ইনোভেশন), সৃজন (ইনভেনশন) এবং আবিষ্কার (ডিসকভার) এই তিনটি ধারণাকে সামগ্রিকভাবে উদ্ভাবন হিসেবে গণ্য করা হলেও প্রকৃত অর্থে পার্থক্য অনেক। তবে তিনটি ধারণাই আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পৃথক অর্থে বিশ্লেষণ করলে এটি স্পষ্ট, উদ্ভাবন-দক্ষতা উন্নত করে, নতুন বাজার তৈরি করে এবং বিদ্যমান পণ্য বা পরিষেবাগুলোকে উন্নত করে অগ্রগতি নিশ্চিত করে। অন্যদিকে সৃজন বা সৃষ্টি সম্পূর্ণ নতুন ধারণা বা সমস্যার সমাধান করে। আবিষ্কার মানুষের জ্ঞানের ভিত্তি প্রসারিত করে উদ্ভাবন ও সৃজন উভয়ের ভিত্তি দেয়। মোটা দাগে বলা যায়, উপাদানগুলো একটি অন্যটির সঙ্গে সমন্বয়মূলক সংমিশ্রণে সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটায়। এ প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবন প্রায়ই সৃজন ও আবিষ্কারের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করে এবং ধারণাগুলোকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য ব্যবহারিক প্রয়োগের সঙ্গে সংযুক্ত করে।
উদ্ভাবন একটি বহুমুখী ধারণা। ক্ষেত্রবিশেষ বিভিন্ন ধরনের উদ্ভাবনের সামগ্রিক উন্নয়নে অবদান রাখে। তাই বিভিন্ন মানদ-ের ওপর ভিত্তি করে উদ্ভাবনকে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে। তবে সাধারণভাবে উদ্ভাবনকে ৪টি শ্রেণিকরণে বিভক্ত করা যায়। ১. পণ্য উদ্ভাবন : যা নতুন পণ্য এবং পরিষেবা তৈরি বা উন্নত করা। যার মধ্যে নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত করে সম্পূর্ণ অফার হিসেবে উপস্থাপন করা।
২. প্রসেস বা প্রক্রিয়া উদ্ভাবন : যা পণ্য উৎপাদন ও পরিষেবা সরবরাহের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত পদ্ধতি এবং সিস্টেমগুলোকে উন্নত করার ফোকাস করে। যার লক্ষ্য বর্ধিত দক্ষতা, উৎপাদন খরচ হ্রাস এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা।
৩. সাংগঠনিক উদ্ভাবন : যা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক কার্যকারিতা ও অভিযোজন যোগ্যতাকে উন্নত করতে প্রতিষ্ঠানের কাঠামো, ব্যবস্থাপনা অনুশীলন ও ব্যবসায়িক মডেল পরিবর্তনকে বোঝায়।
৪. বিপনন উদ্ভাবন : যা পণ্য বা পরিষেবার বর্তমান অবস্থান ও বিপণনের পরিবর্তন করে মার্কেটের ক্ষেত্রে নির্ধারিত গ্রাহকের ভিত্তি করে নতুন বিতরণ ও বিপণন পদ্ধতি প্রবর্তন এবং নতুন বাজার খোঁজা ও বিপণন কৌশল অবলম্বনে উৎসাহিত করার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প, অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং সামাজিক চাহিদার ওপর নির্ভর করে নির্দিষ্ট মিশ্রণ পরিবর্তিত হতে পারে। উদ্ভাবনের জন্য সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা হলে উন্নয়নকে শুধু দ্রুতই নয় বরং তা টেকসই এবং সুসংহত হবে।
দেশের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বেকার যুবসমাজের কর্মসংস্থানের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, কোন প্রক্রিয়ায় বা পদ্ধতিতে কোটি কোটি বেকারের কর্মসংস্থান করা হবে? পরিসংখ্যানের তথ্য মতে, প্রতি বছর প্রায় ২২ লাখ তরুণ-তরুণী কর্মে প্রবেশে সক্ষমতা অর্জন করে। কিন্তু তাদের অধিকাংশের কর্মসংস্থান হয় না। ফলে অব্যাহতভাবে বিশাল বেকারত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। এমনি পরিস্থিতিতে বেকারত্ব হ্রাস করতে হলে অবশ্যই পরিকল্পিতভাবে উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে সরকারকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। উদ্যোক্তা বিকাশ ও উন্নয়নে উদ্ভাবন মূল ভূমিকা পালন করতে পারে।
এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উদ্ভাবনই সমাজ ও রাষ্ট্রের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করে, যার মধ্যে উল্লেখ্য- ক. উদ্ভাবন হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা, নতুন শিল্পের বিকাশকে উৎসাহিত করে এবং সামগ্রিক সম্প্রসারণ অবদান রাখে। খ. উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং উৎপাদনশীলতা বাড়ায়, যার ফলে সম্পদের আরো দক্ষ ব্যবহার এবং অর্থনৈতিক আউটপুট বৃদ্ধি পায়। গ. উদ্ভাবন প্রায়ই নতুন ব্যবসা ও শিল্পের সৃষ্টি করে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে এবং বেকারত্বের হার কমায়। ঘ. যে অর্থনীতি উদ্ভাবনকে অগ্রাধিকার দেয়, তা বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, বিনিয়োগ এবং ব্যবসায়িক অংশীদারদের আকর্ষণ করে। ঙ. উদ্ভাবন টেকসই অনুশীলনের বিকাশ, সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে। চ. একটি উদ্ভাবনী পরিবেশ উদ্যোক্তাকে উৎসাহিত করে, স্টার্টআপ এবং ছোট ব্যবসার বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখে। ছ. জীবনের মান উন্নয়নে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন নাগরিকদের জীবনের সামগ্রিক মান উন্নত করতে পারে, সামাজিক কল্যাণে অবদান রাখতে পারে। জ. অবকাঠামো উন্নয়নে উদ্ভাবন করে, যেমন পরিবহন ও যোগাযোগব্যবস্থা, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঝ. নতুন ও উদ্ভাবনী পণ্য বা পরিষেবাগুলো রাজস্ব স্ট্রিম তৈরি করতে পারে, কর ও অন্যান্য ট্যাক্স আদায়ের মাধ্যমে সরকারি রাজস্বে অবদান রাখতে পারে। ঞ. পরিবর্তনের সঙ্গে উদ্ভাবনী অর্থনীতিগুলো দীর্ঘ মেয়াদে স্থিতিস্থাপকতা এবং স্থায়িত্ব প্রতিষ্ঠা করে, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পরিবর্তন এবং চ্যালেঞ্জগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে আরো ভালোভাবে সজ্জিত।
উদ্ভাবন বিষয়ে উপসংহারে এভাবে বলা যায়, সমসাময়িক বিশ্বে সমৃদ্ধির জন্য উদ্ভাবনের অপরিহার্যতা বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। যে জাতি উদ্ভাবনকে স্বীকৃতি দেয় এবং অগ্রাধিকার দেয়, তারা তাদের নিজস্ব সাফল্যের স্থপতি। সৃজনশীলতাকে মূল্যায়ন করে, পরিবর্তনকে সাদরে আলিঙ্গন করে এবং মানুষের বুদ্ধমত্তার শক্তিকে কাজে লাগায়, এমন একটি সংস্কৃতিকে লালন করে যে সমাজ, সেই সমাজই আজকের চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করে সঠিক পথে পরিচালনা বা নেভিগেট করতে পারে এবং একটি সমৃদ্ধ আগামীর ভিত্তি স্থাপন করতে পারে।
তরুণ বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের মধ্যে জগদীশ বসু, মেঘনাদ সাহা, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, কুদরত-ই-খুদার মতন মেধাবী পুরুষ লুকিয়ে থাকতে পারেন। উচ্চ অট্টালিকা বিশারদ এফ আর খান এ দেশের সন্তান। ড. আবুল হুশাম ও ডা. একেএম মুনির আর্সেনিক রোধে যুগান্তকারী সেনোফিল্টার আবিষ্কার করেছেন। সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের যেসব পণ্ডিত, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী ছড়িয়ে আছেন, তাঁদের নাম-ঠিকানা দিয়ে একটা তালিকা করা প্রয়োজন। আজ দেশের ভেতর এবং দেশের বাইরে যেসব তরুণ উদ্যোগী রয়েছেন, তাঁদের সকলকে আমরা কাজে লাগাতে পারছি না। আমাদের বড় করে ভাবতে হবে এবং আমাদের বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের সেবা গ্রহণের জন্য তৎপর হতে হবে, যাতে করে প্রয়োজনে আমরা তাঁদের সাহায্য নিতে পারি এবং তাঁদের সহায়তা দান করতে পারি।
উন্নয়ন অবিমিশ্র আশীর্বাদ নয়। বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট উন্নয়ন এক ভয়াবহ অভিশাপ বয়ে আনতে পারে। উন্নয়নের নেশায় যেন আমাদের দিগভ্রম না হয়। আমাদেরকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ের সঙ্গে মানবিক বিদ্যার কিছু সবক নিতে হবে। দেশের আইন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে সকলেরই কিছু প্রাথমিক জ্ঞান থাকা দরকার। প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদদের লাগাতার শিক্ষায় আজ কবিতারও স্থান রয়েছে। তেল কোম্পানি ঠেকায় পড়ে নৃতত্ত্ববিদের আশ্রয় নেয়। সুস্থ সমাজচেতনায় দেশের বিরাজমান বৈষম্যকে হ্রাস করার একটা প্রণোদনা থাকতে হবে। সাম্প্রতিক কালে আমরা দেখেছি, বৈষম্যপীড়িত ক্ষুব্ধ প্রজা কী ধরণের প্রবল আকার ধারণ করতে পারে। আমাদের সন্ত্রাস পরিহার করতে হবে এবং সেই উদ্দেশ্যে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক বৈষম্য যাতে বৃদ্ধি না পায়, সেই দিকে লক্ষ করতে হবে।
মনিরুল ইসলাম
সহকারী শিক্ষক(বিজ্ঞান)
কাজী সিরাজুল ইসলাম গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ,আড়পাড়া, মধুখালী, ফরিদপুর।
প্রযুক্তি ও আগামীর বিশ্ব
প্রযুক্তি হল কৌশল, দক্ষতা, পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া সমষ্টি যা পণ্য ও সেবা উৎপাদনে অথবা উদ্দেশ্য সাধনে ব্যবহৃত হয় যেমন বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান। প্রযুক্তি বলতে কোন একটি প্রজাতির বিভিন্ন যন্ত্র এবং প্রাকৃতিক উপাদান প্রয়োগের ব্যবহারিক জ্ঞানকে বোঝায়। নিজের প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে প্রজাতিটি কেমন খাপ খাওয়াতে পারছে এবং তাকে কিভাবে ব্যবহার করছে তাও নির্ধারণ করে প্রযুক্তি। মানব সমাজে প্রযুক্তি হল বিজ্ঞান এবং প্রকৌশলের একটি আবশ্যিক ফলাফল। অবশ্য অনেক প্রাযুক্তিক উদ্ভাবন থেকেই আবার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের অনেক জ্ঞানের ভবিষ্যদ্বা করা হয়েছে। মানব সমাজের প্রেক্ষিতে প্রযুক্তির সংজ্ঞায় বলা যায়, “প্রযুক্তি হল কিছু প্রায়োগিক কৌশল যা মানুষ তার প্রতিবেশের উন্নয়নকার্যে ব্যবহার করে।”
আগামী কয়েকটা দশকে মেশিন লার্নিং আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একটা বড়সড় পরিবর্তন নিয়ে আসতে চলেছে, সেটা নিয়ে বিশ্বের প্রথম সারির বিজ্ঞানীদের মধ্যে দ্বিমত প্রায় নেই বললেই চলে। প্রথমত, গোটা পরিবহনশিল্পের ধারাটাই পাল্টে যেতে পারে। স্ব-নিয়ন্ত্রিত গাড়ি আর ট্রাক থেকে শুরু করে ড্রোন এমনকি রকেটও এর আওতায় চলে আসবে, এমন টাই আশা করা যাচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ দেখা যাবে কারখানার রোবটের কাজকর্মে, মাল সরবরাহের জটিল সব বন্দোবস্ত করতে, শেয়ার বাজারে লগ্নিপুঁজির সিদ্ধান্ত নিতে, স্বাস্থ্য পরিষেবায় বা নতুন ওষুধ বানাতে।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনটা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে চলেছে। বিপুল পরিমান তথ্য বিশ্লেষণ, নতুন তথ্যের ভিত্তিতে নিজেকে পাল্টানোর ক্ষমতা এবং শেষে বিচার বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া এই তিনের জোরে বুদ্ধিমান যন্ত্র পাকাপাকিভাবে আমাদের জীবনে জায়গা করে ফেলবে। আর এই সবকিছু সম্ভব হবে গবেষণার দ্বারা। আমাদের তাই প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতে হবে নতুন নতুন ভাবনার বাস্তবায়নের। পৃথিবী আগাবে সঠিক ভাবনার জন্য আর সঠিক পরিচালনায়। আগামীর বিজ্ঞান আমাদের দিবে সর্বোপরি এক যান্ত্রিক জীবন। তবে মানুষ হারাবে তার নান্দনিকতা। তাই আমাদের উচিৎ মেশিন বা যন্ত্র ব্যাবহার এর সাথে সাথে পরিবেশ এর ও যত্ন নেয়া। একই সাথে মনুষ্যত্ব ও মানবিকতার ও চর্চা করা।
আমরা যে পৃথিবী তে বাস করি তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করি। প্রযুক্তি হল জ্ঞান, যন্ত্র এবং তন্ত্রের ব্যবহার কৌশল যা আমরা আমাদের জীবন সহজ করার স্বার্থে ব্যবহার করছি। আগামী কয়েকটা দশকে যে মেশিন লার্নিং আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একটা বড়সড় ভূমিকা নিতে চলেছে, সেটা নিয়ে বিশ্বের প্রথম সারির বিজ্ঞানীদের মধ্যে দ্বিমত প্রায় নেই বললেই চলে। প্রথমত, গোটা পরিবহনশিল্পের খোলনলচে পাল্টে যেতে পারে। স্ব-নিয়ন্ত্রিত গাড়ি আর ট্রাক থেকে শুরু করে কাতারে কাতারে synchronized ড্রোন এমনকি রকেটও এর আওতায় আসবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ দেখা যাবে কারখানার রোবটের কাজকর্মে, মাল সরবরাহের জটিল সব বন্দোবস্ত। করতে, শেয়ার বাজারে লগ্নিপুঁজির সিদ্ধান্ত নিতে, স্বাস্থ্যপরিষেবায় বা নতুন ওষুধ বানাতে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনটা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে চলেছে। বিপুল তথ্য বিশ্লেষণ (big data analysis ), যন্ত্র চলাকালীন নতুন তথ্যের ভিত্তিতে নিজেকে পাল্টানোর ক্ষমতা (dynamic inputs) এবং শেষে বিচার বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া (intelligent decision making) – এই তিনের জোরে বুদ্ধিমান যন্ত্র পাকাপাকিভাবে আমাদের জীবনে জায়গা করে ফেলবে।
মনিরুল ইসলাম
সহকারী শিক্ষক(বিজ্ঞান)
কাজী সিরাজুল ইসলাম গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ,আড়পাড়া, মধুখালী, ফরিদপুর।
ইতিহাস ঐতিহ্যে আমার জন্মভূমি
search
|
খুঁজে পাওয়া কোড়কদী
**************************************************
১৮৬৯ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল উপন্যাস ’রশিনারা’। ’দুর্গেশ নন্দিনী’ প্রকাশের মাত্র চার বছরের মাথায় প্রকাশিত সেই উপন্যাসটির লেখকের বাড়ি ফরিদপুরের কোড়কদী জানলে সে গ্রাম নিয়ে আগ্রহী না হয়ে পারা যায়?
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে মধুখালী পার হয়ে দই আর মিষ্টিখ্যাত বাগাট থেকে ডান দিকে নেমে গেছে ইটের যে হেরিংবোন আর কাঁচা রাস্তা তা দিয়ে কিলো দুয়েকের ভেতরেই বাংলার অন্য আর সব গ্রামের মতোই কোড়কদীও একটি।
এক সময় ‘ছোট কলকাতা’ হিসেবে পরিচিত ছিল গ্রামটি। এ গ্রামে জন্মেছিলেন উঁচু মাপের বেশ কয়েকজন মানুষ।
১৯১১ সালে মোহনবাগান ক্লাবের অধিনায়ক শিবদাস ভাদুড়ী, তেভাগা আন্দোলনের শীর্ষস্থানীয় নেতা অবনী লাহিড়ী, পÐিত অবন্তী কুমার সান্যাল, নবাঙ্কুর-এর লেখিকা সুলেখা সান্যাল, বিপ্লবী রাজনীতিক শ্যামেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, বরেণ্য নৃত্যশিক্ষক অজিত সান্যাল প্রমুখের বাড়িও এই গ্রামেই। সব যেন হারিয়ে গিয়েছিল বিস্মৃতির অতলে।২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি ইতিহাস পুনরুজ্জীবিত হয় এক বিশাল সমাবেশের মধ্য দিয়ে। আর তারপর থেকে কোড়কদীর মানুষ প্রতি বছর ওই দিনে সভা করেন, আলোচনা চলে অঞ্চলের ঐতিহ্য আর ইতিহাস নিয়ে।দিনটিকে ঘিরে তিন দিনব্যাপী মেলাও চলছে গত বছর থেকে। সে এক হই হই রই রই ব্যাপার।
গ্রামের শুরুতেই ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত রাসবিহারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এখনো দাঁড়িয়ে। খানিক ভেতরে ভেঙে ঝুরঝুরে হয়ে গেছে ‘রামধন তর্কপঞ্চানন লাইব্রেরি’ ভবনটি। ওই দুটি প্রতিষ্ঠান দেখলে স্পষ্ট হয়, কীভাবে ওই গ্রামে ১৯২০-৩০ দশকের দিকেও ৩০/৪০ জন বিএ/এমএ পাস মানুষ ছিলেন। ঐতিহাসিকরা বলছেন, মধ্যযুগের বৃহৎ বাংলার সংস্কৃত শিক্ষার প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় ছিল কোড়কদীর নাম। ১৯২৪ সালে ভারতের পূর্ণিয়া থেকে প্রকাশিত সমালোচনামূলক গ্রন্থ মহাভারত-মঞ্জরীর লেখক ছিলেন এই কোড়কদীর মানুষ। কোড়কদীর মেয়ে মৃদুলা ভট্টাচার্য এ গ্রামে নারী আন্দোলন পরিচালনা করতেন। গ্রামের মেয়েরা কোঁদাল কেটে পুকুর করেছিলেন স্বদেশি যুগে।
কোড়কদী বাংলাদেশের আটষট্টি হাজার সাধারণ গ্রামের একটি। খুঁজলে যে বাংলাদেশের অনেক গ্রামই বারদী বা বিক্রমপুরের মতো ঐতিহ্যশালী, তা কোড়কদী নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমরা বুঝেছি। কোড়কদী গ্রামের সামগ্রিক ইতিহাস ও ঐতিহ্য আমাদেরকে এত বেশি আপ্লুত করেছিল যে আমরা দুই বছর আগে সেখানে একটি সমাবেশ আয়োজনের করি। সমাবেশে কোড়কদীর কৃতী মানুষদের উত্তর প্রজন্মের প্রতিনিধিরাও যুক্ত হয়েছিলেন সে গ্রামের বর্তমান বাসিন্দাদের সঙ্গে। সে মিলনমেলা ছিল ফরিদপুর জেলার এক ঐতিহাসিক ঘটনা, যেখানে জেলার বিপুল সংখ্যক বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী এসে যুক্ত হয়েছিলেন কোড়কদীর গ্রামতলে। সঙ্গে পেয়েছিলাম আরো অনেককে।
দিল্লি থেকে এসেছিলেন অধ্যাপক কৃষ্ণা লাহিড়ী মজুমদার, কুচবিহার থেকে নাট্যকার অলোক ভট্টাচার্য প্রমুখ। আর ঢাকা থেকে আসেন প্রয়াত অধ্যাপক মোজাফফর হোসেন, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন ও আবু সাঈদ খান, ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, সংগীতশিল্পী অধ্যাপক এম এ আজিজ মিয়াসহ বাসভর্তি একগাদা তরুণকর্মী। কামারখালী থেকে এলেন প্রাবন্ধিক আজাহারুল ইসলাম, শিক্ষক শেখর সাহা, আলী নেওয়াজ শায়েস্তা খানসহ আরো কতো কতো জন। ফরিদপুর শহর থেকে অধ্যাপক আলতাফ হোসেন আর রিজভী জামানসহ আরও অনেকের উপস্থিতি বিস্ময়কর উপলব্ধি দিয়েছে সেবার।
কোড়কদী সমাবেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে মধুখালী পার হয়ে বাগাটের আগেই সুসজ্জিত তোরণ সাজানো হয়েছিল। বাস ছেড়ে সবাইকে উঠতে হল মিনিবাসে। কাঁচা রাস্তা দিয়ে মানুষের ঢল নেমেছিল সেদিন। কোড়কদী রাসবিহারী হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে ফুলের পাপড়ি ছুঁড়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল।
কী বিশাল জনসমাবেশ! প্রশস্ত মাঠের চারপাশে বসেছিল গ্রামীণ মেলা। ফরিদপুরের সাহিত্য-সংস্কৃতিকর্মীরা দিয়েছিলেন স্টল। সাজিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথের চিত্র, বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি। এ বিরান প্রান্তরে এমন আয়োজনের কৃতিত্বের প্রশ্নে আবু সাঈদ মিয়া আর অধ্যক্ষ কাজী ফিরোজের নাম ছিল মানুষের মুখে মুখে। মাইকে অধ্যক্ষ ফিরোজের দরাজ কণ্ঠ মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিল দশ ঘন্টার সেদিনকার সমাবেশকে।
বিষয়টি ক্রমে এমন বিপুলতায় রূপ নিয়েছিল যে, স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় সরকার কেউ আর বাইরে থাকেনি। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী, কোড়কদী স্কুলের কৃতী সন্তান ডা. মাসুদ-উল হক মুন্সী ওরফে মুন্সী বেলাল, এলাকার প্রবীণ রাজনীতিক মুন্সী হারুন সকলেই নিয়মিত খোঁজখবর করতে থাকলেন। সামগ্রিক কাজে পাশে থাকলেন ঢাকাকেন্দ্রিক আমার বর্তমান কর্মকাণ্ডের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ মানুষ যেমন কবি চঞ্চল শাহরিয়ার, জাহিদুল ইসলাম শাহ্, নাজমুল হোসেন, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সরকার, বরুণ কুমার বিশ্বাস, লাজিনা হোসেন, মোঃ হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
ঢাকার অতিথিরা ইতিহাস-অনুসন্ধানের আবশ্যিকতা নিয়ে বক্তৃতা করেছিলেন। এলাকার প্রবীণরা করেন স্মৃতিচারণ। অবনী লাহিড়ীর দুই মেয়ে কৃষ্ণা আর অপলা এবং শ্যামেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ছেলে অলোক যা বলেছিলেন তাতে ভিজে উঠেছিল উপস্থিত কয়েক সহস্র মানুষের চোখ। সাংসদ মোঃ আবদুর রহমানের ভাষণ দিয়ে যখন বক্তৃতা পর্ব শেষ হয়েছিল তখন সন্ধ্যা গড়িয়েছে। কিন্তু দর্শক শ্রোতাদের যেন বিরক্তি নেই।
এরপর ছিল সাংস্কৃতিক পর্ব। আকরাম খান আর শ্যামল পাল পালন করেছিলেন অগ্রণী ভূমিকা। যখন সাংস্কৃতিক পর্ব শেষ হলো, ঘড়ির কাটা রাত দশটা পার করছে।
আর যারা দূর দূরান্ত থেকে এসেছিলেন হয়তো তারা কোড়কদী সম্পর্কে ভাসা ভাসা জ্ঞানকে খানিকটা হলেও পূর্ণতা দিতে পেরেছিলেন। কোড়কদী সমাবেশ আমাদের সকলকে করেছিল দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আগ্রহী করেছিল হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের অনুসন্ধানে। শিখিয়েছিল বাংলার সাধারণ মানুষ ধর্ম-বর্ণ-বয়স-লিঙ্গ নির্বিশেষে কেমন সম্মিলিত প্রয়াস গ্রহণ করতে পারে একটি সৎ প্রয়াস সফল করার জন্য।
ঢাকায় কোড়কদীকে উপস্থাপন করতে আমাদের সাহিত্য সংগঠন বাংলাদেশ লিটারারি রিসোর্স সেন্টার (বিএলআরসি) উদ্যোগ নিয়েছিল সমাবেশের আগের দিন ঢাকায় একটা প্রেস কনফারেন্সের। ২৯ জানুয়ারি সে কনফারেন্স হয়েছিল জাতীয় প্রেস ক্লাবে। সংবাদ মাধ্যমের বিপুল সংখ্যক কর্মীর উপস্থিতি সেখানে আয়োজকদের ভীষণভাবে উৎসাহিত করেছিল। বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী যখন বলেছিলেন ‘আসুন আমরা দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে জানি। কোড়কদী দিয়ে শুরু হোক সে যাত্রা’ তখন উপস্থিত অনেকেই উদ্বেলিত বোধ করেছিলেন।
বাংলাদেশ কোড়কদীর মতো শত সহস্র গ্রামের সম্মিলন। অভাব যেটা তা হলো সে সব গ্রামের প্রাচীনতা ও কৃতিত্ব সামগ্রিকতার আলোকে উপস্থাপিত হয় না। কিন্তু কোড়কদীর সে উপস্থাপন সম্ভব হয়েছে। আর তাই ৩০ জানুয়ারি এলেই সে গ্রামে সাজ সাজ রব পড়ে যায়। গতবার পড়লেও এবারে ভাটা পড়েছে। কোনো রাজনৈতিক কারণেই কোড়কদীর বিকাশ রুদ্ধ হওয়া উচিত নয়।
ভবিষ্যত বছরগুলোতে কোড়কদী ২০১০ সালের অনুরূপ উপস্থাপনায় প্রকাশিত হবে বাংলাদেশের হাজার হাজার গ্রামের সঙ্গে সে প্রত্যাশা থাকলো।
সংগৃহীত
মনিরুল ইসলাম
সহকারী শিক্ষক(বিজ্ঞান)
কাজী সিরাজুল ইসলাম গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ,আড়পাড়া, মধুখালী, ফরিদপুর।
Achievement
Achievement
award
Annual sports
Copyright © 2022 All Right Reserved | Powered by : RAUD